ঈসা নৌকায় করে সাগরের অন্য পারে গেলেন তখন তাঁর চারপাশে অনেক লোক এসে ভিড় করল। তিনি তখনও সাগরের পারে ছিলেন। সেই সময় যায়ীর নামে ইহুদী মজলিস-খানার একজন নেতা সেখানে আসলেন এবং ঈসাকে দেখে তাঁর পায়ের উপর উবুড় হয়ে পড়লেন। তিনি ঈসাকে মিনতি করে বললেন, “আমার মেয়েটা মারা যাবার মত হয়েছে। আপনি এসে তার উপর আপনার হাত রাখুন; তাতে সে সুস্থ হয়ে উঠবে।”
তখন ঈসা তাঁর সংগে চললেন। অনেক লোক ঈসার সংগে সংগে যাচ্ছিল এবং তাঁর চারপাশে ঠেলাঠেলি করছিল। 25সেই ভিড়ের মধ্যে একজন স্ত্রীলোক ছিল যে বারো বছর ধরে রক্তস্রাব রোগে ভুগছিল। অনেক ডাক্তারের হাতে সে অনেক কষ্ট পেয়েছিল, আর তার যা কিছু ছিল সবই সে খরচ করেছিল, কিন্তু ভাল হবার বদলে দিন দিনই তার অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। ঈসার বিষয় শুনে সে ভিড়ের মধ্যেই ঈসার ঠিক পিছনে এসে তাঁর চাদরটা ছুঁলো, কারণ সে ভেবেছিল যদি কেবল তাঁর কাপড় সে ছুঁতে পারে তাহলেই সে ভাল হয়ে যাবে। ঈসার চাদরটা ছোঁয়ার সংগে সংগেই তার রক্তস্রাব বন্ধ হল এবং সে তার নিজের শরীরের মধ্যেই বুঝল তার অসুখ ভাল হয়ে গেছে।
ঈসা তখনই বুঝলেন তাঁর মধ্য থেকে শক্তি বের হয়েছে। সেইজন্য তিনি ভিড়ের চারদিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “কে আমার কাপড় ছুঁলো?”
তাঁর সাহাবীরা বললেন, “আপনি তো দেখছেন লোকে আপনার চারপাশে ঠেলাঠেলি করছে, আর তবুও আপনি বলছেন, কে আপনাকে ছুঁলো?”
এই কাজ কে করেছে তা দেখবার জন্য তবুও ঈসা চারদিকে তাকাতে লাগলেন। সেই স্ত্রীলোকটির যা হয়েছে তা বুঝে সে কাঁপতে কাঁপতে এসে ঈসার পায়ে পড়ল এবং সব বিষয় জানাল। ঈসা তাঁকে বললেন, “মা, তুমি বিশ্বাস করেছ বলে সুস্থ হয়েছ। শান্তিতে চলে যাও, তোমার আর এই কষ্ট না হোক।”
ঈসা তখনও কথা বলছিলেন, এমন সময় সেই মজলিস-খানার নেতা যায়ীরের ঘর থেকে কয়েকজন লোক এসে যায়ীরকে বলল, “আপনার মেয়েটা মারা গেছে; হুজুরকে আর কষ্ট দেবেন না।”
সেই লোকগুলোর কথা শুনে ঈসা যায়ীরকে বললেন, “ভয় করবেন না, কেবল বিশ্বাস করুন।”
ঈসা কেবল পিতর, ইয়াকুব ও ইয়াকুবের ভাই ইউহোন্নাকে তাঁর সংগে নিলেন। পরে যায়ীরের বাড়ীতে এসে তিনি দেখলেন খুব গোলমাল হচ্ছে। লোকেরা জোরে জোরে কান্নাকাটি করছে। ঈসা ভিতরে গিয়ে লোকদের বললেন, “আপনারা কেন গোলমাল ও কান্নাকাটি করছেন? মেয়েটি মারা যায় নি, ঘুমাচ্ছে।”
এই কথা শুনে লোকেরা হাসাহাসি করতে লাগল। তখন ঈসা তাদের সবাইকে ঘর থেকে বাইরে যেতে বললেন। তারপর তিনি মেয়েটির মা-বাবা এবং তাঁর সংগের সাহাবীদের নিয়ে মেয়েটি যে ঘরে ছিল সেই ঘরে ঢুকলেন। মেয়েটির বয়স ছিল বারো বছর। ঈসা মেয়েটির হাত ধরে বললেন, “টালিথা কুম্,” অর্থাৎ “খুকী, তোমাকে বলছি, ওঠো।” আর তখনই মেয়েটি উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল। এতে তাঁরা খুব আশ্চর্য হয়ে গেলেন। এই ঘটনার কথা কাউকে না জানাবার জন্য ঈসা কড়া হুকুম দিলেন এবং মেয়েটিকে কিছু খেতে দিতে বললেন।